“লিচুর বাগানে” – একটা জগাখিচুড়ি

গানটির ইউটিউব চ্যানেলের তথ্যমতে – লিচুর বাগান (কে দিলো পিরিতের বেড়া) একটি প্রচলিত 'ঘাটু গান'। এই লোকগানটির লিরিকে ছত্তার পাগলা কিছু অংশ যুক্ত করে গাইতেন। তার মাধ্যমেই এই গানটি বিখ্যাত হয়।

তান্ডব সিনেমায় প্রথমবার গানটা শুরু হতেই মনে হলো, একটা কোক স্টুডিওর গান শুরু হলো। তবে সেটাপের বাজেট অতি উচ্চ তাতে কোনো সন্দেহ নাই আমার। এটা ভাবতেই দেখলাম, পালকিতে করে সাবিলা আসছে। পহেলা এক্সপ্রেশনটাই দর্শক হিসেবে আমার ফেইক মনে হইসে, শাকিবের ইন্ট্রি ঠিকঠাক।

নরমালি গানের একটা ভূমিকা থাকলেও প্রথম প্যারাতেই এখানে – কমলার বাগানে সই গো – দিয়ে মূল এক্সপ্রেশনে চলে গেছে। এতে করে বুঝে ওঠার আগেই ভাইব চলে আসছে। এইটুকু অংশের নাচের কথায় আসি এবার। লিচুর বাগান, কমলার সই এর সাথে ‘মুষ্টিবদ্ধ’ দৌড়ের কি সম্পর্ক আমি বুঝি নাই। একটা অট্টহাসি দিসি এটা দেখে। মনে হইলো, রিক্সার বডিতে সিএনজির চাকা লাগানো হইসে। গানের গতি না থাকলেও হঠাত মুভমেন্ট শুরু হয়ে গেছে।

লিচুর বাগানে নাচের একটি দৃশ্য

‘কেমন প্রেমিক তুই বন্ধুরে’ দিয়ে সেই চিরচেনা সিডিউসিভ আচরণ এবং আইটেল গার্ল- এর উদর-ফূর্তি শুরু। অদরকারি আইটেম গানের বিপক্ষে আমার অবস্থানের অন্যতম কারণ, এই ধরনের অব্জেক্টিফাইং কালচার। যদিও দিন শেষে আপনি এই গান দিয়েই পার্টিতে নাচেন। এটা ভাবতে ভাবতে আবার লিচুর বাগানের সাথে মুষ্টীবদ্ধ দৌড় শুরু হয়ে গেছে।

এরপরের প্যারার কোনো আগা-মাথা পাই নাই। শাকিব খানের গলার সাথে ‘কুদ্দুস বয়াতি’ টাইপের গলা কিভাবে ম্যাচ হয়? যাই হোক, এরপর আসে প্রীতমের সোলো স্যাড টাইপ গানের ভাইভ। এই পার্ট শুনতে যেয়ে আমার মনে হইসে, কোথায় যেন শুনসি এই টোনটা? এইতো মনে পড়ছে – শরতের শেষ থেকে – কপি একদম! আলাদাভাবে শুনতে এই পার্ট-টুকু খারাপ লাগে নাই যতক্ষণ না পর্যন্ত খেয়াল করলাম, পিছনে ‘লিচুর বাগান’ ডাকতেসে! এটা কোনো কথা? সাবিলা নুরকে দেখে মনে হচ্ছে, উনি চেষ্টা করতেসে, কিন্তু “সিনেমার দর্শক” হিসেবে আমার মনমতো হচ্ছে না আসলে।

লিচুর বাগানে – গানের একটি দৃশ্য

আবার শুরু হইসে হঠাত করে, ‘মুষ্টীবদ্ধ দৌড়’। পরের সিনে ফেক সূর্যমুখী দিয়ে ডাকা শুরু হলো। এটাও ভালো লাগে নাই। ২ সেকেন্ডের জন্য ঢাক-ঢোল দিয়ে আবার ‘মুষ্টিবদ্ধ দৌড়’।

প্রীতম হাসান কি করতে চাইসে এই গানে, আমি বুঝি নাই। সিংক খুজে পাই নাই আমি। আপনারা পেলে জানাইয়েন আমাকে। হয়তো তিনি নতুন কিছু ট্রাই করতে চাইসেন।অথবা আমার ধারণা সময় ছিলো না বলে, নিজের ‘আসো মামা হে, শরতের শেষ থেকে, আর কোক-স্টুডিওর’ গান থেকে মিক্স করে একটা গান বানায় দিসে।

লিচুর বাগানে – গানের একটি দৃশ্য

তবে প্রথম শোনায় ভালো না লাগলেও, অনেকবার শোনার পরে আমি গুনগুন করে গাইসি গানটা। ভাইভটা মাথায় ঘোরে, যা বুঝলাম। সেইম জিনিসটা আমার পাসুরি গানের সময় হইসিলো।

আপনার কেমন লাগসে?

থাম্বনেইলের কোলাজটা ‘উই থট’ পেইজ থেকে নেওয়া।

Share this and let us know about your opinion on this